Responsive Advertisement

Bangla Song Lyrics Book

বরিশাল সিটি করপোরেশন র্নিবাচনের ফলাফল





সকাল থেকে প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করেই নারী ও পুরুষ ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে থাকেন। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবেই চলছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অভিযোগ জানানো হচ্ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে যায়। তবে ভোট গ্রহণে এই ঘটনার প্রভাব দেখা যায়নি। আজ সোমবার বিকেল চারটায় বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। একজন মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা, কিছু কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া এবং দু-একটি বিচ্ছিন্ন হাতাহাতির ঘটনা ছাড়া ভোট গ্রহণ ছিল শান্তিপূর্ণ। ভোটার উপস্থিতিও ছিল মোটামুটি সন্তোষজনক। তবে কিছু কেন্দ্রে ইভিএম জটিলতায় ভোট দিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় ভোটারদের। ভোট গ্রহণের শেষ দেড় ঘণ্টা প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৬টি কেন্দ্রে সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রথম আলোর চারজন প্রতিবেদক ও তিনজন ফটোসাংবাদিক ১৩টি ওয়ার্ডের ৩০টি কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।

পরিস্থিতি ছিল শান্ত, ভোটার উপস্থিতি মোটামুটি

সকাল থেকে ভোটের পরিবেশ ছিল শান্ত। কেন্দ্রগুলোয় ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ভোট গ্রহণে ধীরগতি ছিল। বিশেষ করে নারীদের জন্য স্থাপিত কেন্দ্রগুলোয় ধীরগতি বেশি ছিল। রিটার্নিং কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, ভোট গ্রহণ শুরুর প্রথম তিন ঘণ্টায় প্রায় ২২ শতাংশ ভোট পড়ে।

সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে বাবা পরশ চন্দ্র ঘোষ ও ছেলে শ্যামল চন্দ্র ঘোষ একসঙ্গে ভোট দিতে আসেন। ২ নম্বর ভোটকক্ষে তাঁরা ভোট দেন। বের হয়ে তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, ইভিএমে ভোট দেওয়া কঠিন নয়, কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকায় একটু ভয় লাগছিল। পরে দেখলেন, সহজেই ভোট দেওয়া গেছে।

নগরের আমতলা এলাকার সরকারি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। সেখানে ভোট গ্রহণ ছিল খুবই ধীরগতির। কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. নাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৭০ জন ভোট দিয়েছেন। এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৫৮২।

অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন ৭১ বছর বয়সী রিজিয়া বেগম। বয়সের কারণে তিনি হাঁটতে পারেন না। সে কারণে মেয়ে মালা বেগমের কোলে চড়েই ওপরের ভোটকক্ষে গিয়ে ভোট দেন।

মালা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মায়ের বয়স হয়ে গেছে। চলতে-ফিরতে কষ্ট হয়। তাঁর পক্ষে সিঁড়ি দিয়ে ওঠাও সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও তাঁর মা ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাই কষ্ট হলেও তাঁকে তিনি ভোট দিতে নিয়ে আসেন।

ইভিএমের জটিলতায় গতি ধীর

নগরের ব্যাপ্টিস্ট মিশন স্কুলে নারীদের একটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৮টা ৪৯ মিনিটে কেন্দ্রটির ৮ নম্বর বুথে ৩১৪ ভোটের মধ্যে মাত্র ৭টি ভোট পড়েছে। কিন্তু কেন্দ্রটির বুথগুলোর সামনে দীর্ঘ লাইন।

ইসমত জাহান নামের এক ভোটার বলেন, ‘সকাল আটটায় এসে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করছি। কিন্তু সিরিয়াল পাচ্ছি না। একজন ভোট দিতে গেলে অনেক সময় নিচ্ছে।’

এই বুথের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাসলিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, নারীরা এই সিস্টেমে (ইভিএম) ভোট দিতে বেশ সময় নিচ্ছেন। তাই ধীরগতি।

ভোট শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটে সিটির অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রের ৪ নম্বর পুরুষ ভোটকক্ষে ১০টি ভোট পড়ে। এরপর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) জটিলতার কারণে কক্ষটিতে প্রায় ৪৫ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। কক্ষটির সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সুমন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভোটারদের আঙুলের ছাপ মিলছে না। কারিগরি দলকে জানানো হয়েছে।

কক্ষে থাকা সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর (আনারস প্রতীক) এজেন্ট আবুল খায়ের তখন প্রথম আলোকে বলেন, ইভিএমে জটিলতায় ভোট গ্রহণ বন্ধ। সকালে যাঁরা ভোট দিতে এসেছেন, বেশি দেরি হলে তাঁরা একবার চলে গেলে আর আসবেন না।

প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর নির্বাচন কমিশনের কারিগরি দল ত্রুটি সারে। পরে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post